জঙ্গি অভিযানে বিধ্বস্ত আতিয়া মহল ছাড়ছে ভাড়াটেরা
12-04-2017
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকারিপোর্টটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় 'আতিয়া মহল' নামে যে বাড়িতে জঙ্গি-বিরোধী অভিযান হয়েছে, সেই বাড়ির ভাড়াটেরা তাদের ফ্ল্যাটে ফিরতে শুরু করেছেন।
কিন্তু বাড়ির মালিক তাদের বলেছেন, সেখানে তারা আর থাকতে পারবেন না। কারণ, সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে বাড়িটির এতই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যে এটি আর বাসযোগ্য নেই।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলার সময় ঐ ভবনে বহু বিস্ফোরণ ঘটে এবং ব্যাপক গোলাগুলি চলে।
অভিযান চলার সময় এবং পরে এ পর্যন্ত ১১ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন র্যাব, পুলিশ, সাংবাদিকসহ অনেকেই।
জঙ্গিদের বিস্ফোরণ এবং গুলি বর্ষণের মাঝে নিরাপত্তা বাহিনী আতিয়া মহলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়।
এটি করতে গিয়ে বাড়িটির অনেক ফ্ল্যাটের দেয়াল শাবল মেরে ভেঙ্গে ফলেতে হয়।
সিলেটের সাংবাদিক আহমেদ নূর জানাচ্ছেন, এটা করার প্রয়োজন ছিল। তা না হলে জানমালের ক্ষতি আরো বেশি হতো।
পাঁচ-তলা আতিয়া মহলের প্রতিটি তলায় ছয়টি করে ফ্ল্যাট রয়েছে।
এর মধ্যে বহু ফ্ল্যাটের ভেতরে দেখা যায় গোলাগুলির চিহ্ন।
এই বাড়ির নীচ তলায় একটি ফ্ল্যাটে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আস্তানা ছিল বলে নিরাপত্তা বাহিনী বলছে।
সন্দেহভাজন জঙ্গিরা যে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিল, অভিযানের পর সেখানে গিয়ে দেখা গেছে প্রায় সবই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
ঘরের আসবাবপত্র, সিলিং ফ্যান ইত্যাদি কিছুই বাদ যায়নি।
একদফা জঙ্গিদের বিস্ফোরণ এবং পরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি ও রকেট হামলায় বিশেষভাবে ঐ ফ্ল্যাটটি পরোপুরি ধ্বংস হয়।
পুরো ভবনটায় যে পরিমাণ বিস্ফোরক ছিল তাতে ভবনটা ধ্বংস হয়ে যেতে পারতো বলে সেনা কর্মকর্তারা সে সময় জানিয়েছিলেন।
সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানের মুখে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা ফ্ল্যাটের ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ফ্ল্যাট থেকে ঘন ধোঁয়ার কুন্ডলি পাকিয়ে উঠতে দেখা যায়।
কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গিরা একই সাথে বিভিন্ন আলামত ধ্বংস করার চেষ্টা করে।
নিরাপত্তা বাহিনী অনুমতি দেয়ার পর আতিয়া মহলের ভাড়াটেরা ফিরে আসতে শুরু করেন।
অনেককেই দেখা যায় ফ্ল্যাটের ভেতরে ঢুকে তাদের আসবাবপত্র জড়ো করছেন।
আতিয়া মহলের মালিক বলছেন, সেনাবাহিনীর তরফ থেকে তাদের সাবধান করা হয়েছে যে অভিযানের সময় বাড়িটির যে কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে, তার ফলে ভাড়াটেদের সেখানে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে ভাড়াটেদের চলে যাওয়াই উচিত।
ভাড়াটেরা হয়তো চলে যাবেন নতুন কোন বাড়িতে।
কিন্তু সাথে নিয়ে যাবেন জঙ্গি-বিরোধী অভিযান চলার সময় কয়েক দিনের ভয়াবহ স্মৃতি।
আতিয়া মহলে খালি হয়ে গেলেও এই বাড়ির ওপর নজর থাকছে নিরাপত্তা বাহিনী সদস্য এবং সাংবাদিকদের।
জঙ্গি দমনের ইতিহাসে আতিয়া মহল এক মাইল ফলক হয়ে থাকবে মানুষের স্মৃতিতে।
ঢাকারিপোর্টটোয়েন্টিফোর.কম/এইচএমএল